(১)
ধরা যাক ছেলেটির নাম নেই।
মেয়েটির নাম আপনাদের বলছি না যদি আপনারা চিনে ফেলেন!
তারা দুজনে চাকরী করে এক অফিসে, যদিও ডিপার্টমেন্ট আলাদা। পদমর্যদায় মেয়েটি সিনিয়ার। তবে দুজনের বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় তাদের প্রায় রোজ দেখা হতো।
যাতায়াতের পথে, অটোর লাইনে, মেট্রো রেলের কামড়ায় তাদের সাক্ষাৎ হতো। তাছাড়া common cafeteria তে লাঞ্চ আওয়ারেও অনেক সময়.....
যাই হোক, মেয়েটি ছেলেটির থেকে বয়েসেও সিনিয়ার ( মেয়েদের বয়স জানতে নেই বলে ছেলেটি কোনদিন জানতে পারেনি সঠিক পার্থক্যটা ঠিক কত) এবং বিবাহিতা। একটি সন্তানও আছে। এবং তার গর্ব ছিলো যে সে তার পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য নিজের ঘর বাড়ি সব ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছিলো। মেয়েটির আর্থিক সাচ্ছল্য ছিলো, কিন্তু ছেলে ইস্কুলে চলে যাওয়ার পর বাড়িতে একা থাকতে চাইতো না বলেই সে এই চাকরী নিয়েছিলো।
অনেক সময় এমন হয়েছে যে সে আর ছেলেটি এক অটোয় চড়েছে বা এক সাথে লাঞ্চ করতে বেড়িয়েছে। টাকা পয়সা সেই মেয়েটিই খরচ করতো.... ছেলেটিকে খরচ করতে দিতো না।
ছেলেটি মেয়েটিকে সিনিয়ার দিদি বলেই মেনে নিয়েছিলো। তার সেই পাতানো "দিদি" টিকে সে অনেক ব্যক্তিগত কথাও বলতো। এর ফলে সেই মেয়েটি তার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতো।
ছেলেটি এবং মেয়েটির বন্ধুত্ব বেশ চলছিলো। সেটা মুঠোফোনের এই সহজলভ্যতার ঠিক পূর্বযুগ। মেয়েটির একটা বেশ সুদৃশ্য মুঠোফোন ছিলো। ছেলেটি একদিন লাঞ্চ ব্রেকের সময় তার দিদি-বন্ধুকে লজ্জার মাথা খেয়ে বললেই ফেললো, " দিদি, আমি একটা মোবাইল নেব ভাবছি, কিন্তু ওই ব্যাপারে আমি প্রায় কিছুই জানিনা। আপনি আমায় একটু এই ব্যাপারে সাহায্য করবেন? "
" ও মা, মোবাইল নেবে? কোন কোম্পানীর নেবে? এখন এন্টেনা ছাড়া যেগুলি বেরিয়েছে, সেই রকম একটা নাও। ওগুলোই বেশ ট্রেন্ডি।"
" হ্যা, কিন্তু আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানিনা...."
" আরে, আমি ঠিক গাইড করবো তোমাকে, চিন্তা করো না।"
শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো যে এক শণিবার ছুটির পর ধর্মতলার ময়দান ক্যান্টিনে বসে মোগলাই পরোটা দিয়ে টিফিন করতে করতে মুঠোফোন সংক্রান্ত টিউটোরিয়াল ক্লাস হবে।
নির্ধারিত সময় দুজনে উপস্থিত হলেন ময়দান ক্যান্টিনে।
বিশাল বড়ো আকৃতির পেডেস্টাল ফ্যানটার সামনে দুজনে বসে কড়া মোগলাই এর ফরমাস দিয়ে শুরু হলো টিউটোরিয়াল ক্লাস।
দুজনেই মাথা নীচু করে মুঠোফোনের স্ক্রীনে চোখ রেখে বসলেন।
ছাত্রের চোখে নতুন জিনিশ শেখার আগ্রহ........ শিক্ষিকা....
বলা হয় স্ত্রী চরিত্র দেবতারাও বুঝতে পারেন না। ছেলেটিও বুঝতে পারেনি সে কোন দিকে চালিত হচ্ছে।
তার চোখের পর্দায় খালি একটা গোলাপী ফর্সা হাতের তালুর উপর রাখা ছাই রঙ এর মুঠোফোনের সবুজ স্ক্রীন।
স্ক্রীনের উপর ফুটে ওঠা লেখা গুলো ধীরে ধীরে মগজে তুলে নিচ্ছিল ছেলেটা, বাধ সাধলো ক্যান্টীনের ছোকরা চাকরটা।
"দুটো কড়া মোগলাই।" বাঁজখাই গললার চীৎকারে চমক ভাঙে তার।
হাত বাড়িয়ে প্লেট দুটো টেনে নিতে নিতে চোখ গেলো ডান পাশে বসা তার দিদি-বন্ধুর দিকে।
আগে খেয়াল করেনি, অন্যদিনের সালোয়ার এর বদলে মেয়েটির পরণে একটা গোলাপী শাড়ি। হাল্কা মেহগণীর ছোয়া লাগানো কোকড়া চুল পাখার হাওয়ায় ইতস্তত উড়ছে। ফর্সা, খুব ফর্সা গোলাপী পান পাতা মুখের বাদামী চোখগুলি এক দৃষ্টিতে তাকেই দেখছে। ঠোঁটের হাল্কা গোলাপী মোম রঙ একটু আধটু উঠে যাওয়ার কারণে তাদের আকর্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ছেলেটি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়। কিন্তু কোন এক অজানা আকর্ষক ক্ষমতা তার চোখদুটো টেনে নিয়ে যায় মেয়েটির দেহের অনাবৃত অংশের দিকে। না চাইলেও চোখ চলে যায় লম্বা সোনার চেনের আগায় ঝোলা ছোট্ট লকেটটির দিকে......
(২)
সোনার লকেটখানার অর্ধেকটা লুকিয়ে ছিল মেয়েটির দেহের ভাজে। সেই স্থানের পানে কোন পুরুষের দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকা অশোভনীয়। কিন্তু ছেলেটির চোখ ঠিক সেই স্থানেই আটকে গিয়েছিল। এবং এমন ভাবে আটকে গিয়েছিলো যে সে আর বাকি সব কিছু ভুলে গিয়েছিলো।
সম্বিত ফিরে পেলো মেয়েটির প্রশ্নে, " কি দেখছো অমন করে? "
" দিদি, আপনাকে শাড়ি পরে খুব ভালো লাগে। আপনি কেন যে সালোয়ার পরেন? "
"শাড়ি সামলে কোলকাতার রাস্তায় চলা ফেরা খুব ঝামেলার। তাই পরি না। তোমার ভালো লেগেছে? "
" মার্ভেলাস.... জামাইবাবু এটা কিনে দিয়েছেন বুঝি? "
" তোমার জামাইবাবুর কি আর সময় আছে? তিনি তো ব্যাবসার কাজে হিল্লি দিল্লী করেই ব্যস্ত। আমি কি পরলাম, না পরলাম সে নিয়ে তার কোন হুশ নেই। আমি নিজেই কিনেছি। সুন্দর হয়েছে? "
"অপূর্ব.... আপনার ফর্সা রঙে আরো ভালো লাগছে।"
" আরে, আজ তো এটা পরাই হতো না। ম্যাচিং ব্লাউজ পাচ্ছিলাম না.... অতি কষ্টে এটা খুজে পেলাম। তাও টাইট.... দেখো কেমন চেপে বসে আছে..... "
ছেলেটি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো।
মোগলাই পরোটার প্লেট শেষ হয়ে গিয়েছিলো। এবার বাড়ি ফেরার পালা। মেট্রো রেলে একসাথে বেশ খানিকটা যাওয়া যেত, অন্য দিনের মতো, কিন্তু ছেলেটির ইচ্ছে করলো না। সে একটু ইতস্তত করে বললো, " দিদি, আমায় আজ একটু চাঁদনী ঘুরে যেতে হবে, আপনি এগিয়ে যান, আমি পরের মেট্রো ধরবো।"
এই বলেই, উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে ছেলেটি রাস্তা পেড়িয়ে এগিয়ে গেলো গ্রান্ড হোটেলের দিকে।
রাস্তা পেড়িয়ে উদ্ভ্রান্তের মত এগিয়ে গেলো ধর্মতলা স্ট্রীটের দিকে। একটা বিশাল শপিং কমপ্লেক্স বানানো হচ্ছে বলে মোড়ের বাড়িটা বাঁশ আর তেরপলের আড়ালে। সেই বিল্ডিং এর শিড়িগুলো মানুষের বসার জায়গা.... অফিস ফেরতা অনেকেই বসে চা-সিগারেট এ কিছু সময় ব্যয় করে। ছেলেটি সেই শিড়িতে বসে পকেট থেকে চ্যান্সেলারের প্যাকেটটা বের করলো।
সিগারেটে পর পর কয়েকটা দ্রুত টান দেওয়ার পর ছেলেটি চোখ বন্ধ করে সেদিন বিকেলের ঘটনাবলি ভাবতে লাগলো।
কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই তার মনে ভেসে আসছিলো সেই গোলাপী আঁটো সাঁটো পোশাকে মোড়া তার "দিদি- বন্ধু"র দেহাংশ..... এক অদ্ভুত অজানা আনন্দে তার মন ভরে উঠছিলো। এবং প্রাথমিক লজ্জা, জড়তা কাটিয়ে উঠে সে এখন সেই "দৃশ্য" গুলি উপভোগ করতে শুরু করলো।
মনের মধ্যে যা recorded, সেই দৃশ্যগুলি বারবার rewind করতে লাগলো যাতে ভুলে না যায়.....
এবং প্রতি বার তার কল্পনায় সে সাহসী হয়ে উঠতে লাগলো...
একটু একটু করে.....
যথারীতি সোমবার এলো। অটোর লাইনে সে অন্যদিনের তুলনায় একটু আগেই দাড়ালো। ইচ্ছে ছিলো তার "দিদি-বন্ধু"র সাথে যাওয়ার। কিন্তু পর পর বেশ কয়েকটা অটো ছেড়ে দেওয়ার পরও তার দেখা মিললো না।
অফিসে পৌছে তার কাজে মন বসছিলো না। ঘন ঘন জল পান আর toilet এ যাওয়ার মাঝে তার মন জুড়ে ছিলো লাঞ্চ ব্রেকে তার "দিদি-বন্ধু".... পাছে কিছু ভুল করে ফেলে তাই সে খুব জরুরী কোন ফাইলে হাত দিচ্ছিল না। প্রধানত সে তার ডেস্কের কাগজপত্র উদ্দেশ্যহীন ভাবে নাড়া চাড়া করছিলো সময় কাটানোর জন্য।
অবশেষে লাঞ্চ ব্রেক এবং ক্যাফেটেরিয়া।
কিন্তু সেখানেও তাকে হতাশ হতে হলো। তার "দিদি-বন্ধু" কে সে সেখানেও খুজে পেলো না।
বুক ঠুকে সে হাজির হলো সেই মেয়েটির অফিসে... যদি কাজের চাপে... কিন্তু না, সেখানে খবর পেলো যে তার "দিদি-বন্ধু" সেদিন আসেনি।
শুধু সেইদিন না। পর পর তিনদিন ছেলেটি হতাশ হলো।
প্রাথমিক হতাশার পর চিন্তা হতে শুরু করলো। কেন তার "দিদি-বন্ধু" কামাই করছে? শরীর খারাপ? ছেলে অসুস্থ? বরের সাথে বাইরে বেড়াতে গেছে? চাকরী ছেড়ে দিয়েছে?
আগেই বলেছি ছেলেটির মুঠোফোন ছিলো না। মেয়েটির মুঠোফোন থাকলেও সেটার সাথে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা জ্ঞান ছেলেটির ছিলো না।
মেয়েটির বাড়ি ছেলেটির পাড়ায় নয়। তবে কাছা কাছি। কিন্তু সঠিক ঠিকানা না জানার কারণে সে তার বাড়িও যেতে পারছিলো না।
মোদ্দা কথা ছেলেটির মন জুড়ে সেই মেয়েটি.... বিরাজ করছিলো। ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, প্রেম.... তার চেয়েও বড় একটা আকর্ষণ ছেলেটিকে বাধ্য করছিলো মেয়েটির সম্পর্কে চিন্তা করতে, স্বপ্ন দেখতে..... এক অজানা খিদে তার মন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো।
সেই খিদের সাথে সে তার ২৪ বছর বয়সে আগে কখনো পরিচিত হয়নি।
সেই খিদে তাকে বাধ্য করছিলো তার এতদিনকার "দিদি-বন্ধু" কে শুধু "বন্ধু" ভাবতে।
(৩)
মেয়েটির দর্শন পেতে ছেলেটিকে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। প্রায় দশ দিন পর হঠাৎ ছেলেটি আবিস্কার করে যে মেট্রোরেলের কামড়ার এক কোণে সে দাঁড়িয়ে আছে। কামড়ায় হাল্কা ভীর ছিলো, তবুও ছেলেটি মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেলো।
কাছে গিয়ে পৌছতেই মেয়েটি তার দিকে ফিরে তাকায়।
ছেলেটি সেই দৃষ্টির সামনে গুটিয়ে যায়। এতদিন ধরে সে যা যা বলবে বলে ঠিক করেছিলো, সব কেমন যেন সেই কটা চোখের মোহময়ী চাউনিতে গুলিয়ে যায়। নিজের অজান্তেই ছেলেটির গলা দিয়ে অস্পষ্ট জড়ানো কিছু শব্দ বেড়িয়ে আসে।
"তুমি কি আমায় এখনো দিদি ডাকবে?" মেয়েটি দ্বিধহীন ভাবে জিজ্ঞেস করে।
সঠিক উত্তর কি হতে পারে সেটা ভাবতে ভাবতে তাদের নির্দিষ্ট স্টেশান এসে যায় এবং ছেলেটি নেশাগ্রস্তের মতো মেয়েটির পিছু পিছু ট্রেন থেকে নেমে যায়।
একটা ঘোড়ের মধ্যে দিয়ে ছেলেটি মেয়েটির পিছু পিছু রাস্তায় বেড়িয়ে আসে।
বাকি পথ ছেলেটি কিছু আর বলার সুযোগ পায়না।
নিজের অফিসের দিকে যেতে যেতে মেয়েটি ছেলেটির দিকে ফিরে বলে, " ছুটির পর কথা আছে। এক সাথে ফিরবো। আগে আগে পালিও না কিন্তু! "
উত্তরে ছেলেটির মুখ দিয়ে শুধু একটা বোবা শব্দ বের হয়।
সারাদিন কাজের ব্যস্ততার মধ্যে ছেলেটি সকালে শোনা শব্দগুলি বিশ্লেষণ করতে থাকে।
একটা মেয়ে, তার থেকে বয়সে বড়ো, বিবাহিতা, এক সন্তানের জননী, কিছুদিন আগেই তাকে নিজের দেহ সৌষ্ঠব দেখার আহ্বান করেছিলো, আজ তাকে বলছে যে এতদিনের "দিদি" ডাক তাকে ছাড়তে হবে।
এর অর্থ কি হতে পারে?
মেয়েটি কি তাকে ভালোবাসে? কিন্তু এই ভালোবাসার অর্থ কি? তার দিক থেকেই বা এই ভালোবাসার প্রতিদানে কি কিছু করা সম্ভব? তাছাড়া যে সামাজিক প্রেক্ষিতে সে বড়ো হয়েছে, সেখানে এধরনের সম্পর্ক ঠিক মেনে নেওয়া যায় না। তবে...... হ্যা, তবে আজ যদি সে মেয়েটির ডাকে সাড়া দেয়, তাহলে ক্ষতি কিছু আছে কি?
সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন যে ছুটির সময় হয়ে গেছিলো ছেলেটি খেয়াল করেনি। অফিস থেকে বেড়োতেই দেখে যে মেয়েটি লিফটের সামনে অপেক্ষা করে আছে।
সিঁদুর রঙা শিফনের শাড়িতে তার রূপ যেন শেষ বিকেলের সূর্যকেও ম্লান করে দিচ্ছে। গোলাপী ফর্সা গালদুটি কাশ্মীরের আপেলকে হার মানিয়ে দেবে যেন। শরীরের গঠন হাল্কা চর্বির প্রলেপ পেয়ে যেন আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে..... আর তার চোখ!!
ছেলেটি সেই কটা চোখের মায়াজালে হারিয়ে যেতে যেতে এগোতে লাগলো। সেই গোলাপী ঠোটের ফাঁকে মুক্তোর মত সাদা দাঁতের হাসির আকর্ষন তাকে যেন হাতছানি দিতে লাগলো এক অজানা দুনীয়ার পানে। মেয়েটির গোলাপী গালের টোলের হাতছানি উপেক্ষা করতে না পেরে ছেলেটি লিফটের দিকে এগিয়ে গেলো।
লিফটের ঠাসা ভিড়ে দুজনে কোন মতে এটে গেলো। লিফট চালু হওয়ার পর ছেলেটি দুটো জিনিশ আবিস্কার করলো।
প্রথমত লিফটটা নীচে নামার বদলে উপরে উঠছে, অর্থাৎ তাদের ফোর্থ ফ্লোর থেকে টুয়েল্ফথ ফ্লোর অবধি উঠতে হবে এবং তার পর নীচে নামতে হবে এবং তাতে প্রায় তিরিশ মিনিট সময় লাগবে।
দ্বিতীয়ত, মেয়েটি তার শরীরের সাথে একবারে সেঁটে দাড়িয়েছে।
তার ফলে আগামী আধ ঘন্টা তার শরীরটা আর তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকছে না......
ছেলেটি চোখ বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চিপে এই অত্যাচার সহ্য করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিলো.....
লিফটটা গ্রাউন্ড ফ্লোরে পৌছনো মাত্র ছেলেটি ছিটকে বেড়িয়ে গেলো..... বিল্ডিং এর বাইরে বেরিয়ে সে বুক ভরে শ্বাস নিলো। এতক্ষণের বদ্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি পেয়ে তার স্বস্তি হলো। এ যেন বাঘিনীর খাঁচায় দীর্ঘ তিরিশটা মিনিট কাটানো।
প্রতি সেকেন্ড এক একটা ঘন্টার থেকেও লম্বা.... তার ওপর সেই বাঘিনীর জিহ্বা এবং থাবার আক্রমণ......
প্রাণ হাতে করে কাটানো তিরিশ মিনিট যেন এক ধাক্কায় ছেলেটির বয়স বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দিলো।
বিল্ডিং থেকে বেড়িয়েই ছেলেটি কাঁপা হাতে একটা সিগারেট ধরালো। সিগারেটের ধোয়া গিলে একটু ধাতস্থ হয়েই সে সংকল্প নেয় যে চাকরিটা পাল্টাতে হবে.....
(সমাপ্ত)
______________
© অভিজিৎ মুখার্জী
No comments:
Post a Comment