একবার শুধু দেখেছিলাম তোমাকে , নীল জিন্স ক্যাজুয়াল টপ আর কাধে লাল ব্যাগ।
রাস্তা পার হবার জন্য দাঁড়িয়েছিলে, ইচ্ছে করছিলো
ছুটে গিয়ে তোমার হাত ধরে তোমাকে রাস্তা পার করে
দি i আর এক দিন দেখলাম তোমাকে পার্ক স্ট্রিটের
একটা রেস্তোরাতে... বসেছিলে কোনের একটা টেবিলে..... হাতের ওপরে থুতনিটা রেখে।
কি সুন্দর লাগছিল তোমাকে, পিঙ্ক কালারের শাড়ি
পরেছো সাথে ম্যাচ করা ব্লাউজ বা হাতের কব্জিতে দামী একটা ঘড়ি, চোখে কাজল, কপালে লাল টিপ,
মাঝে মাঝে আমাকে দেখছিলে, বুঝলাম তুমি কারুর
জন্য অপেক্ষা করছো i কিন্তু আমার খুব ইচ্ছে
করছিলো তোমার পাশে বসে তোমার সাথে ক্যান্ডেল
লাইট ডিনার করতে।
রেস্টুরেন্টের মায়াবী আলোয় তোমাকে কেমন স্বপ্নের মত লাগছিল, কেমন ঘোর লেগে গিয়েছিলো আমার।
আমি জাস্ট কয়েক সেকেন্ডের জন্য তাকিয়েছিলাম
ওয়েটারের খোঁজে, ফিরে তাকিয়ে দেখি তুমি নেই, বেমালুম উবে গেছো টেবিলটা থেকে।
মাথাটা কেমন যেন ঘুরে গেলো, এটা কি করে সম্ভব
এইতো এইমাত্র এখানে ছিলে । তার পর বহুবার তোমাকে দেখতে পেয়েছি কখনো সিটি সেন্টারে,
কখনো আইনোক্সে বা হটাৎ হটাৎ রাস্তায় ।
কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না কেন তোমার সাথে বার
বার আমার দেখা হচ্ছে , কিন্তু ক্ষনিকের জন্য, পরমুহুর্তে তুমি হারিয়ে যাচ্ছো ।
ধীরে ধীরে আমার এমন অবস্থা হলো রাস্তায় বেরোলেই
আমার চোখ দুটো তোমাকে খোঁজে, ঘুমোতে পারিনা তোমার মিষ্টি মুখটা আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে,
... আমি কি পাগল হয়ে গেলাম ?
একদিন আমার এক অসুস্থ বন্ধুকে দেখতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছি, দেখা হয়ে যাওয়ার পর
বাইরে বেরিয়েছি ,দেখি একটা ফুল দিয়ে সাজানো
কাচের গাড়ি কোনো ডেড বডি নেবার জন্য দাড়িয়ে আছে, সাথে কিছু মানুষ।
কৌতুহল বশতঃ আমি একটু দাড়ালাম, দেখলাম
হাসপাতালের কয়েকজন ডোম একটি অল্প বয়েসী মেয়ের ডেড বডি কাচের গাড়িটাতে শুইয়ে দিলো,
মেয়েটির মুখের দিকে তাকাতেই আমার সারা শরীরে
বিদ্যুৎ খেলে গেলো, এইতো সেই মেয়েটি যে সব সময় আমার চোখের সামনে আর মনের গভীরে ঘুরে
বেরিয়েছে..ধরতে গিয়েও ধরতে পারিনি যাকে i
আমিও একটা ট্যাক্সি নিয়ে কাচের গাড়িটার সাথে পৌছে গেলাম শ্বশানে।
হাজার চিন্তা মাথার ভেতরে কিলবিল করছিল, কে এই মেয়েটি কেনইবা সারাক্ষন আমার সামনে আসতো,
আর কেনইবা আজ ওর শেষ যাত্রায় আমাকে ওর
সাথে টেনে আনলো শ্বশানে .... চুল্লির সামনে শুইয়ে
রেখেছে ওকে, নিশ্চিন্ত চিরনিদ্রায় প্রশান্ত ওর মুখ ....ফুলের মত মিষ্টি আর পবিত্র ..
যথা সময় ওকে ঢুকিয়ে দিল চুল্লির ভেতরে ওর অবিনশ্বর আত্মা মুক্ত হতে নশ্বর দেহ থেকে,
.....খোঁজ নিয়ে জানলাম একটা রোড এক্সিডেন্টে
মেয়েটি মারা গেছে i ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরে এলাম ....কিছুতেই মেলাতে পারছিলাম না কেন মেয়েটিকে আমি বার বার দেখতাম আর কেনইবা ওর সাথে কথা বলতে পারিনি একবারও ......
আজও সেই রহস্যের সমাধান করে উঠতে পারিনি ...............
*****************
@শ্যামল নিয়োগী
No comments:
Post a Comment