কলিকাতা! এক না দেখা নস্টালজিয়া। সরুগলি, চওড়া
রাস্তা। অবিরাম গাড়ি ঘোড়ার(এখনও চলে) যাতায়াত। প্রতিটি ধুলোকনায় ইতিহাস। না জানা না
বলা অতীত।গথিক শিল্পের পিলার দেওয়া ইন্দোপারশিয়ান ইন্দোইস্লামিক ধাঁচের সুবিশাল
অট্টালিকার ধংসস্তুপ।আধুনিক ভারতের পীঠস্থান, কত বিপ্লবের জন্মস্থান-মৃত্যুভূমী।আমার
সেই সাধের city
of joy এর
কাছে যতদিনে পৌঁছলাম ততদিনে সে বার্ধক্যে উপনীত হয়েছে, কলিকাতা হয়ে
গেছে কোলকাতা।
এই
কোলকাতাকে হয়তো অনেকেই চেনে কিন্তু আমি বলব অন্য কোলকাতার গল্প! কোলকাতার ভেতরেই
বাসকরা আর এক কোলকাতা!
পেশায় এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্তার বিক্রয় প্রতিনিধী হবার
দরুন আমার অনেক জায়গায়ই কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তিন বছর আগে বদলি হয়ে এলাম
কোলকাতায়। কাজের তাগিদে প্রায় সারা উত্তর কোলকাতা চষে বেরাতে হয়।তো কিছুদিন আগে
নির্দেশ এল এক নতুন মার্কেটে কাজ শুরু করার। যেখানে যাওয়া তো দূরের কথা যার নাম
পর্যন্ত কোনও ভদ্রলোক মুখেও আনেনা।
“নিশিদ্ধ পল্লী” সোনাগাছি।
যদিও জায়গাটার নাম কোন এক পির-ফকিরের নামে হয়েছে
বলাবাহুল্য এখন না আছে পীর না ফকির। একটু ভয় ভয় তো করছিলই... প্রথনবার! তাই এক
সিনিয়র কলিগকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলাম।
কি অদ্ভুত! এ’ত আলাদা একটা জগৎ। অনেকটা
পাঁচিল বিহীন দুর্গের মত। মনিহারি দোকান, মুদি দোকান, ওষুধ দোকান কি নেই? আর সবচেয়ে অবাক করল সোনার দোকান! যেখানে বড় বড় স্বর্ণ কোম্পানির
চাপে পাড়ার সোনার দোকানগুলো লাটে উঠে গেছে সেখানে একটা ছোট্ট ঘুপচি ঘরে সোনার
দোকানটি রমরমিয়ে চলছে।আর সেই কুক্ষাত কলঙ্কিনি চরিত্রহীনা বেশ্যার দল! ওরা ছায়া
পর্যন্ত মারাতে দেয়নি। এতটাই ভদ্র এতটাই পবিত্র। আর সবচেয়ে মজার রাস্তাঘাটে
চলাফেরা করা তথাকথিত ভদ্রলোকের মেয়েদের চেয়ে পোশাকে কাপড়ের পরিমান ওদের বেশি ছিল।
ওখান থেকে বেরিয়ে এসে ভাবলাম কোনটা পতিতালয়, কিচ্ছুখন আগে যেখানে ছিলাম সেটা নাকি সারাজীবন যেখানে বাস করেছি
সেটা! জানি না। উত্তরটা এখনও খুঁজে বেরাচ্ছি।শুধু এ’টুকু বলতে পারি কেউ অভাবে হয় কেউ স্বভাবে।
__________
No comments:
Post a Comment