টাটকা অনুভূতি
*********
পুজোর আগে শেষদিন স্কুল সেরে বাড়ি ফেরা। দুটো আক্ষরিক অর্থে পুঁটলি কলাপাতা রঙের শাড়ি জড়ানো বড় এক পুঁটলির সঙ্গে প্রায় দৌড়াচ্ছে ভরা আশ্বিনে চৈত্রসম রৌদ্রতেজ মাথায় নিয়ে, লক্ষ্য সুপার ফাস্ট বাসটা ধরা। হাতের নাগালে বাসের দরজার রডটা না পাওয়া পর্যন্ত স্বস্তি নেই। এদিকে কেয়া শেঠের এস. পি. এফ. ফরটি গাল বেয়ে বইছে। কিন্তু সেদিকে তোয়াজ করার অবসর কই !! ধরতে হবে সুপার ফাস্ট 'নাইটেঙ্গেল'।
শেষমেষ পেলাম নাগাল। উঠেই একটা পুঁটলি ওপরে চালান করে ছোট পুঁটলিটি কোলে নিয়ে কাঙ্খিত একটা সিটে বসা, ডানদিকের মাঝখানে জানালার ধার। আমার মতো বাস জার্নি সোহাগীদের এমন একটা সিট পেলে যেন সেদিনের যাত্রা এক অন্য আরাম পায়। বসেই তো নজর নিজ পানে। মধ্যবিত্ত শাড়ি পরিহিতা প্রায় নিত্যযাত্রীর একটা জিনিষ তো কমন হয়ই, আঁচলের পিনটা বা প্লেটগুলো ঠিকঠাক জায়গায় আছে তো তা বারবার সজাগ নজরে দেখে নেওয়া। আমিও তার ব্যতিক্রম হই কী করে !!
*********
পুজোর আগে শেষদিন স্কুল সেরে বাড়ি ফেরা। দুটো আক্ষরিক অর্থে পুঁটলি কলাপাতা রঙের শাড়ি জড়ানো বড় এক পুঁটলির সঙ্গে প্রায় দৌড়াচ্ছে ভরা আশ্বিনে চৈত্রসম রৌদ্রতেজ মাথায় নিয়ে, লক্ষ্য সুপার ফাস্ট বাসটা ধরা। হাতের নাগালে বাসের দরজার রডটা না পাওয়া পর্যন্ত স্বস্তি নেই। এদিকে কেয়া শেঠের এস. পি. এফ. ফরটি গাল বেয়ে বইছে। কিন্তু সেদিকে তোয়াজ করার অবসর কই !! ধরতে হবে সুপার ফাস্ট 'নাইটেঙ্গেল'।
শেষমেষ পেলাম নাগাল। উঠেই একটা পুঁটলি ওপরে চালান করে ছোট পুঁটলিটি কোলে নিয়ে কাঙ্খিত একটা সিটে বসা, ডানদিকের মাঝখানে জানালার ধার। আমার মতো বাস জার্নি সোহাগীদের এমন একটা সিট পেলে যেন সেদিনের যাত্রা এক অন্য আরাম পায়। বসেই তো নজর নিজ পানে। মধ্যবিত্ত শাড়ি পরিহিতা প্রায় নিত্যযাত্রীর একটা জিনিষ তো কমন হয়ই, আঁচলের পিনটা বা প্লেটগুলো ঠিকঠাক জায়গায় আছে তো তা বারবার সজাগ নজরে দেখে নেওয়া। আমিও তার ব্যতিক্রম হই কী করে !!
সবকিছু ঠিকঠাক করে সবে ব্যাগের
চেন খুলছি সহচর অ্যানড্রয়েডটি বের করবো বলে ওমনি এক ভদ্রলোক প্রায় হুমড়ি খেয়ে পাশের
সিটটিতে এসে বসলেন। বাস ছাড়লো, ঘর্মাক্ত গায়ে জানলা দিয়ে আসা ফুরফুরে হাওয়া ক্লান্তিকে
একটু প্রশমিত করলো। তারপরেই সেই গতানুগতিক কাজ, ডেটা অন করে নোটিফিকেশন ও ওয়াল চেক।
হঠাৎই দেখি পাশে বসা ভদ্রলোকের ডান হাতটি আমার বাঁ দিকে চেপে আসছে। ভাবলাম হয়তো বাসার
ঝাঁকুনি। একমুহূর্ত পরেই ফিল করলাম চাপটা বাড়ছে। এক ঝটকায় মাথা গরম করে ফোন থেকে নজর
সরিয়ে লোকটিকে আপাত শাসণ করবো বলে ওনার দিকে ফিরবো ভাবছি।
মনে মনে তো আওড়াচ্ছি ,
"যতসব জানোয়ার মুখোশের আড়ালে.. ।"মুহূর্তেই রাগ মাথায় উঠলো আরও একবার চাপ
আসতেই। হঠাৎ লক্ষ্য গেল ওনার ডানহাতের দিকে। দেখলাম হাত কাঁপছে, বাসার কাঁপুনিতে না,
এমনিই...অনবরত। বুঝতে আর অসুবিধা হলো না ঐ প্রদত্ত চাপের কারণ। মধ্যবয়স পার করা ঐ ভদ্রলোকের
হাতটারই তো ব্যালেন্স নেই। নিজের অজান্তেই নিজের বাঁ হাত দিয়েই ওনার হাতটা ব্যালেন্স
করে ধরলাম। লোকটি এক অদ্ভুত মায়া নিয়ে আমার দিকে দেখলেন আর অস্ফুটভাবে বলে উঠলেন,
"মা...!! "
তারপর ঘন্টাখানেক এক অচেনা মানুষের সাহারা হওয়া। নামার সময় মাথা এক স্নেহের আশীষ দিকে বললেন, "ভালো থেকে মা।" এক স্মিত হাসি শুধু দিতে পারলাম ওনার আশীষের বিনিময়ে।
বাস এগিয়ে চললো গন্তব্যে....
ফোন বের করে ওয়ালে দেখলাম এক যুদ্ধ বিষয়ক লেখা। পড়তে পড়তে মনে মনে ভাবলাম, "এই স্বার্থান্বেষী পৃথিবীতে কে কখন কীভাবে কার কাজে লাগে কেই বা জানে !! তবু মানুষ হয় ক্ষমতান্বেষী অহংকারী কিসের জন্য..!!"
উত্তর হয়তো কোথাও নেই.....
© শেহনাজ
তারপর ঘন্টাখানেক এক অচেনা মানুষের সাহারা হওয়া। নামার সময় মাথা এক স্নেহের আশীষ দিকে বললেন, "ভালো থেকে মা।" এক স্মিত হাসি শুধু দিতে পারলাম ওনার আশীষের বিনিময়ে।
বাস এগিয়ে চললো গন্তব্যে....
ফোন বের করে ওয়ালে দেখলাম এক যুদ্ধ বিষয়ক লেখা। পড়তে পড়তে মনে মনে ভাবলাম, "এই স্বার্থান্বেষী পৃথিবীতে কে কখন কীভাবে কার কাজে লাগে কেই বা জানে !! তবু মানুষ হয় ক্ষমতান্বেষী অহংকারী কিসের জন্য..!!"
উত্তর হয়তো কোথাও নেই.....
© শেহনাজ
No comments:
Post a Comment