লক্ষ্মী
পুজোর বাজার নিয়ে হেঁটে হেঁটেই ফিরছিলাম আজ সকালে। আলাপবিহীন মুখ চেনা পাড়ার ভেতর
দিয়ে।
হঠাৎ কানে এল এক
বাড়ির একতলা থেকে মহিলার কন্ঠস্বর
“তোমার সাথে আর কোন্-নো দিন কথা বলব না। যখন যা
মুখে আসবে তাই বলবে। দুই- একদিনের মধ্যেই আমি ......” বাকিটা বুঝতে
পারলাম না।
বড্ড
খারাপ লাগল। পুজোর দিনে ঘরের লক্ষ্মী উত্ত্যাক্ত!
কি
মনে হ’লো বলে ফেল্লাম “কেন গো?, ওরকম ঝগড়া আজকের দিনে
করতে নেই”।
এবার
বাড়ির ভেতর থেকে পুরুষ কন্ঠস্বর “এই কেরে?”
জোরে
পা চালিয়ে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু দাঁড়িয়ে গেলাম।
এক
বছর চল্লিশের পুরুষ ও তাঁর থেকে কিছু কম একটি মহিলা বারান্দায় এসে দাঁড়াল।
আমি
দাঁত বের করে হাসছি।
লোক্টা
“আমাদের বাড়ির ব্যপারে আপনি মাথা গলাবার কে
হে?”
আমার
দন্ত তখনো বেড়িয়ে আছে।
মহিলা, “সত্যি, কি অসভ্য পাড়া, নিজেদের মধ্যে একটু কথাও বলা যাবে না? তোমাকে কতবার বলছি অন্য জায়গায় ঘর দেখ। এই সেদিন দুপুর
বেলায় কতগুলো ছোকড়া আমার বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে কু কু করে আওয়াজ করছিল।”
এবার আমার বল
পেনাল্টি বক্সের মধ্যে
- “এই যে এবার আপনারা একটা বিষয়ে দুজনে
মিলে গেলেন। আমার কাজ শেষ” এই বলে
যাবার জন্যে তোড়জোড় করছি ।
এমন
সময় লোকটা- “কে বলেছে আমাদের মধ্যে মিল নেই?”
আমি “না কিছুক্ষণ আগে ছিল না। একটু সরে গয়েছিল”
লোকটাঃ
“এই শুনুন, নিজের কাজে যান তো। আমাদের নিজেদের মত থাকতে দিন।”
আমিঃ “এই তো ‘আমাদের’ – ‘আমি’ নই, এটাই শুনতে চেয়েছিলাম এতক্ষণ। এবার যাই।”
এবারে
দুজোনেই মুচকি হেসে ফেলেছে।
আমি হাঁটা
দিলাম। এতক্ষণ ধরে বাজারেরে থলেটা হাতে ঝুলে- বেশ ভারী লাগতে লেগেছে এবার।
:
:
:
:
:
পুনশ্চঃ গোটা
ঘটনাটাই কষ্ট-কল্পিত।ঝগড়া একটা হচ্ছিল বটে। এবং মহিলাটি হুমকিও দিচ্ছিলেন। ব্যাস
এই পর্যন্তই। মহিলার কথাগুলো কানে যখন আসে তখন মনে হয়েছিল ঘটনাটার এরকম কমিক
নিষ্পত্তি হলে কেমন হয়? মাঝে
মাঝে তৃতীয় ব্যক্তির অযাচিত ইন্টারফেয়ারেন্সে কোন সমস্যার সমাধান যদি ঘটায়, ক্ষতি কি?
© দেবাশীষ দাশগুপ্ত
No comments:
Post a Comment