Saturday, 29 October 2016

।। বিস্মরণ ।।


বিস্ফোরক হয়ে গন্ধক খোজার আগে - দুরন্ত কিছু চুম্বন।
যুদ্ধক্ষেত্রে সাজিয়েছ আমায় আহত সূর্যের মতো।
পরাজিত হতেও আপত্তি নেই।
স্তনবৃন্ত থেকে বিষপানে উদ্ধত যৌবন।।

দিন ও রাতের সন্ধিক্ষনে রাখা নিষিদ্ধ স্তবকে - লিখে রাখা পরবর্তী হাতবদলের ইস্তেহার।।


কত চোটে লতানো হাতের আঙুল
কত চুমুতে কাঁটা হারানোর খেলা
উপহারে ফুল নয় - ক্যাকটাস।
স্ববিরোধীতায় উত্তেজিত হই দুজনেই।এরপর ক্যাম্পফায়ার।
নিভুনিভু আলো-আঁধারিতে পোড়া ত্বক।বেশ লাগে বাস্তুসাপের মড়া খোলস।।

যে ইতিহাসে ব্যতিক্রম বাকি রেখেছিল - তার দরজায় ঘোলাটে ক্রিয়াপদের অকপট স্বীকারোক্তি।।


প্রত্যেক কবিতায় তুমি রাত ভিজিয়েছ।
প্রত্যেক কবিতায় তুমি নির্বোধ পারদ মাখিয়েছ - গোপন মেঘলা পর্দায়।ফুলদানি ভেঙ্গেছ।ফুল ছিঁড়েছো।মসৃন সুতোয় বোতাম জড়িয়েছ।

যে শাড়িটা খুলে রেখে আমাকে স্পর্শ করেছ - কবিতায় তার রঙ নীল।

কোনো কথা বলিনি।স্রেফ চাঁদের আড়াল চেয়েছি।দৈব অবেলায় দানব রুপ অতই কি সহজ?

তাই অথই জলে চোরাবালি জীবন্ত হোক - মৃত উপগ্রহে ঘাতক হয়ে উঠুক বৈরাগী বিজারণ।।


চোখে এঁকেছি কয়লার গুঁড়ো
তাই পিছলে যাচ্ছে তোমার মেহেন্দি করা হাত।যদি তা হাত না হয়ে সাপ হতো - অমৃত উপোসি সুখে শাঁখা ও সিঁদুরবিহীন ছবি।

অতএব মাটির কলঙ্কেও মহাপ্রস্থানের প্রতীক।যে জন্মস্থানে ছিল অতিগোপনীয় জড়ুল - জড়তা নিভৃতে সামিল।শ্মশানের বাসি জামা আদপে অভিমানী।

নদীর বিনিময়ে পাহাড় - আকাশ ছাড়িয়ে নদী - উচ্চতায় ক্রমশঃ শুকিয়ে যাওয়া অভিযোজিত তাপ সংরক্ষিত হিমাংকের নীচে।।


আলপনা না দিয়ে তুমি খেয়ার সাগর এঁকেছ।খেয়ালে আবির মাখিয়েছি তোমায় সাদাকালো।সেখানে কি সত্যি কি তুমিই ছিলে?নাকি অন্য আবহ কিছু।
তোমার জটিল ছবি ক্লান্ত হলে - বারবার দিগন্ত সীমানায় সমকোণী ত্রিভুজ।।

যে শরীরের আঘাত প্রতিষ্ঠা করি সবটুকু তোমার - সেটাও প্রাচীন মিথ্যে। আসলে কবিতার শরীর বড্ড বহুগামি।।


কোনো এক নির্ঝর উপন্যাসে মৈথুন প্রশ্ন এলে - সমাজ বহির্ভূত।
অথচ এ সমাজেই আত্মমৈথুন বিকলাঙ্গ দামী।চাদর চড়িয়ে নাও।গোপনে নিজেই নিজের সাথে মিলিত হও।উত্তর অবকাশে বিলিয়ে দিয়েছ কিছু প্রজাপতি।

ভুল কোরো না - কোরাস নিয়মানুবর্তিতায়।প্রজাপতি কখনোই জোনাকির মতো স্বল্পায়ু নয়।তবে মোমবাতি নিভিয়ে দিতে পার অপরাধী ঋতুরসে।

ঈশ্বরও যদি জন্ম দিতে পারে অবৈধ গোপন মানুষ - সামাজিক ভয় কেন পরলোকে বিসদৃশ উপবিলাসিতায়।

আজন্ম সন্ধিক্ষন জুড়ে একমুখী রুদ্রাক্ষ প্রতিরোধ।শহরে প্রবলবেগে বাজছে সাইরেন।।


আমার ভালো ও খারাপ পুরোটাই তোমার।আমার নষ্ট ও পবিত্রতা পুরোটাই তোমার শব্দচয়নে।
ঈশ্বর হয়ে ওঠা - বা শয়তান
উপাসনা তুমি যেটার করতে চাও।

আমি কেবল হাজার বছরের গচ্ছিত চুম্বন স্বার্থে।

কেউ জানেনা কোন রাতে কখন কোন ঘড়িতে তোমার শেষ প্রশ্নের ঋন রেখেছিল কেউ।

আমার কবিতা নিজেকে মৃত অন্ধকারে নিঃশ্বেস করে তোমার আড়ালে।

আসলে তুমিও বড্ড স্বার্থপর কবিতা শোনাচ্ছ - দেশ কাল পাত্র নিয়ে।।


যে শব্দে মেপেছিলে নিঃশ্বাস
চাঁদকেও বেহিসাবি করতে রাজি।কালক্ষেপ ব্যয় না করে রাত্রি বেশে অহরহ সাজ - ভেবেছ এভাবেই কিছু নিষিদ্ধ প্রেমে আগুন ছড়াবে।।

ঘুমে ও জাগরনে কিছু সোনা পুনরায় মাটি - কার চোখে কত জল!শান্তি ওড়াবে।।

অস্থির কানামাছি।শেকড় হারিয়ে যায় কাগজ অসুখে।বেসামাল কবিতারা তরলে ও তরল জ্বালায়।শহর আচমনে পায় অগভীর আলোর শূন্য বিলাস।।


এসোনা কিছুটা প্রেম সমুদ্রে গচ্ছিত রাখি।চন্দন বাটি।মাখি ও মাখাই।দুজনেই তো আদপে মানুষ।

চলো একসাথে সঙ্গমস্থল রুপে বেছে নি শশ্মান ও চিতা।অথবা কবরে ঘুম অতলান্তিক।

তাজমহলে প্রেম নয়।মন্দিরে শরীর নয়।মসজিদে প্রহেলিকা নয়।ঈশ্বরে লিঙ্গ নয়।।

উল্কাপাত যদি ঝরাতেই না পারি
প্রেমপ্রেম প্রেমরসে কেন যে মাতামাতি?

উৎসবে আলোর ধূলো - প্রার্থনায় স্পর্শ হাহাকার।তবে কি মাটির পুতুল হলে ঘনিষ্ঠতা একটু বেশী?

১০
ছায়ার শরীরে লেগে থাকা কিছু ব্যস্তানুপাতিক অভিশাপ -
বিস্তারিত জানালে খানিকটা ভাগ করে নিতাম।হয়তো এখানেও প্রচুর গলদ।যে মাটিতে চাষ হয় তার বুকে বৃথার প্রলেপ।অনুলেপনে আগামী আবহাওয়ার উল্লাস সতর্কবার্তা।

তবু কিছুটা ভিন্নতর উপকূলে নতুন শহর - নতুন আবাস - নতুন ঘড়ি।চলো।ভিসুভিয়াসকেও বাতিল করে নতুন কিছু বানাই।

চোখে জ্বালাচ্ছ চুম্বন প্রতিশোধ - যা পেতে কেবলই বাড়ছে ব্যস্ততা।।

১১
সে ঈশ্বরকেই ক্ষমা করা যায় - রতিক্রীড়ায় এখনো মানুষকে ডাকেন গভীর সোহাগে।

বাকিটুকু তারাবাতি হয়ে পুড়ে যাক।সাইক্লোন আসে যায় - সাদা পাতায় পাখিজগতের বেগ ঘন্টায় একশো মাইলের কিছু বেশী।

সাতরাজার ধন - পাথর ও পাহাড়ের হীরে-মানিক।এসবক্ষেত্র  হাস্যকর মৃগশিরার সুখ।

ব্যতিব্যস্ত আলোকীয় পথে ঈশ্বর মানেই অপরাধী শ্বেতকণিকা।

তুমিও অভ্যাস করছো অশ্লীল বাতিঘরে থাকা।।

১২
নতুনত্ব অহংকারের স্বাদে দ্রাব্যতা বাড়িয়েছ নৌকা ও ছাতার।কিছু রাস্তাকেও শান্তি দিয়েছ শেষ নিংড়ানো ঝিনুক ভাষায়।চাইনি ঘনক - তবুও বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছ।

ঘনিষ্ঠ মগ্নতার কোনো শব্দই আর অবশিষ্ট নয় - অতঃপর দেহাতি বিশ্লেষণে হানা দেয় বিকৃত রক্তক্ষরন।মৃতকোষ হাতড়ে ছেঁড়ে অশত্থামা অভিক্ষেপ।

বিষাক্ত রজককণা কতোটা নীলে সম্পূর্ণ - কেউ জানি না।।

১৩
অ্যাসিডে গলিয়েছি পাথর - হ্যাংওভার কাটেনি।টলমল পা মানেই ভিত্তিহীন সোনার খনি।

যে জমিতে আপন শেকড় - প্রত্নতাত্ত্বিক বাদানুবাদে অভিসারী হিম।ভিজেয়েছে বহুকিছু আদানপ্রদান।কিছু অপলক দেখায় - অতিপ্রাকৃত বিধান।।

বিচার কোরো না ঘুম - চোখ লেগে গেলেও দীপাবলি শুভেচ্ছান্তে হ্যালির ধূমকেতু।যে মনে মজেছিলে তুমি - কেন যে আটকে রাখ অমূলক অন্ধকার।।

প্রেম ছাড়াও আরো যদি অমাবস্যা বাকি থাকে - প্রভূত আপত্তি সত্ত্বেও তারাবাতি নিভিও।আলো চাইলেই তোমাকে দেখার লোভ বাড়ে।।

১৪
যেটুকু সীমাবদ্ধতা ছিল তার পুরোটাই তরলমুখি।তাই পরিচয় বাড়ার চেয়ে অপরিচিতা থাকাই ভাল।যে শস্যে ছুঁয়েছি উত্তাপ - আধবোঁজা ক্ষমায়, নীল ভেদ করে ক্ষতবিক্ষত করে সীমানা।ঠোঁটে ঠোঁট সমকামী হলেই প্রয়োজনীয়তা বাড়ে, কি নাম - কোথায় থাক - বাসায় কে কে আছে?

এরচেয়ে ছাই উড়ানোর গ্রহনযোগ্যতা অনেক ভালো।ফিনকি দিয়ে রক্ত ফোঁটায় ঝর্ণাকলম ফিনিক্স পাখি আঁকে।।

১৫
আদরের থালায় সাজিয়ে রাখা শুকনো কাগজের সাম্পান।অঙ্গুরীয় নতুনত্বে তাই পথ হারানো আনবিক আবেশে।
পুরাণ অথবা যে কোনো প্রেমের কবিতা - ব্যভিচারী ঈশারায় অবস্থিত বেগুনী রাজপ্রাসাদ কবির সহজাত।তাই চিতায় পড়ে থাকা মাটির গুঁড়োর পরবর্তী পর্যায়ে সমুদ্র সেতুহীন।।

কোনো ভাবেই উত্তাপনগরী ভাসে না জলজ প্রার্থনায়।।

______________
© রাহুল গাঙ্গুলী

No comments:

Post a Comment