একটি মৃত্যু আর কতগুলি প্রশ্ন
-----------------------------
-----------------------------
আবার ঝড় উঠবে, নিস্তেজ হয়ে পড়া স্নায়ুগুলি সক্রিয়তার চরম সীমায় পৌঁছাবে I রাস্তাঘাট অল্প হলেও অবরুদ্ধ হবে I সন্ধ্যের অন্ধকার দূর করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে মোমবাতির নিভু নিভু আলোয় I স্যোসাল মিডিয়ার পেজগুলিতে একের পর পোস্ট হবে I প্রতিবাদীরা ফেসবুকে মানব বন্ধন করবে I অগ্নিঝরা লিখনীতে ব্ল্যাংক পেজে আগুন জ্বলবে কিংবা কুম্ভরাশ্রুতে পেজগুলি ভিজে সপসপে হয়ে যাবে I কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলবে না I
পনপ্রথা নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও কেন আজও পর্যন্ত পিতামাতাকে সর্বসান্ত করে একটি মেয়েকে চোখের জলে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় ?
কেন পনপ্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কোনো খবর সংবাদপত্রের শিরোনাম উঠে আসে না ?
কেন ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের কোনো অভিযোগ জমা পড়ে না ? তাহলে আমরা কি চরম পরিণতির জন্য অপেক্ষা করে থাকি ?
কেন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ ও শিক্ষিত যুবক যুবতীরা এই প্রথাটিকে নীরবে প্রশ্রয় দেয় ?
কেন এই যুবকেরা তাঁদের পিতামাতার অন্যায় দাবি গুলি র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে না ?
কেন নিচমনস্ক, হীনমনস্ক পিতামাতারা ছেলের শ্বশুর বাড়ির টাকায় ঝলমলে বিবাহ অনুষ্ঠান ও উপাদেয় ভোজের আয়োজন করতে লজ্জাবোধ করেন না ?
কেন ওই সকল সুশিক্ষিত যুবকেরা শ্বশুরের দেওয়া দু চাকায় বা চার চাকায় চড়ার সময় পিছনে কোনো জ্বালা অনুভব করে না ?
কেন সুশিক্ষিত মেয়েরা এই হীন দাবি গুলির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় না ? কেনো তাঁদের মেরুদন্ড সাময়িক সময়ের জন্য নমনীয় হয়ে যায় ?
কেন আইন থাকা সত্বেও সেগুলির বাস্তবায়নের কোনো প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় না ?
কেন ধারাবাহিক ভাবে এই ঘৃণ্য প্রথাগুলোর বিরুদ্ধে প্রচার করা হয় না ? কেনো অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে উদাহরণ তৈরি করা হয় না ?
কেন সেই সকল লড়াকু মেয়েরা অবশেষে আত্মহননের পথটি বেছে নেয় ? তাহলে কি তারা তাঁদের লড়াইয়ে নিজেদের খুবই একাকী অনুভব করে ?
কারন একটাই মেয়েরা তাদের অধিকার সমন্ধে এখনো সচেতন ও সংগঠিত নয় I তাঁদের বুঝতে হবে, তাঁরা নিজেরা সচেতন না হলে সমাজ বা সরকার কেউ তাঁদের সম্মান ও জীবন রক্ষা করতে পারবে না I নারী সংগঠনগুলি কে আরো ও বেশি সক্রিয় হতে হবে এই ধরনের করুণ পরিণতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধের জন্য I গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠুক প্রমীলাবাহিনী যাতে একটি মেয়েকেও মানসিক বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার না হতে হয় I
একবিংশ শতাব্দী হোক্ নারীবিপ্লব, নারী মুক্তির শতক । যাতে কোনো নিরুপমা, গীতাকে অন্ধকার ঘরের কোনো চোখের জল ফেলতে না হয়, মায়ের কোল খালি করে একরাশ ঘৃণা নিয়ে ইহ জগত ত্যাগ করতে না হয় ।
@দূর্জয় সাউ
No comments:
Post a Comment