Thursday, 13 October 2016

ব্রতকথা - ৬

(লক্ষ্মী পূজা স্পেশাল )

লেখক- সুব্রত অধিকারী
--------------------------

মার্তৃসঙ্গে পুজো পেয়ে মেটেনা যে আশ।
আলাদা পূজিত হবে ছিল অভিলাস ।।

দুর্গা পূজোর পরে যে পুর্নিমার তিথি ।
লক্ষ্মী পূজো পুনরায় এ রকমি রীতি ।।

কোজাগরী পুর্নিমাতে লক্ষ্মী পূজা ঘরে ।
বাড়ির মেয়েরা তার আয়োজন করে ।।

ঘরে নাকি লক্ষ্মী দেবী করিলে বিরাজ।
অন্নের যোগান হয়, না করিলে কাজ ।।

সম্পদের দেবী তাঁকে বলেন অনেকে।
সম্পদ প্রাপ্তির লোভে পূজা করে তাঁকে।

পদচিহ্ন আঁকা থাকে দিয়ে খড়ি মাটি ।
দেবী নাকি প্রবেশিবে ওই পথে হাটি ।।

নিকানো উঠানে থাকে আলপনা আঁকা।
পিতলের ঘটে দেখি আম পাতা রাখা ।।

সঙ্গে থাকে দেবীমুর্তি মৃত্তিকা নির্মিত।
সিংহাসনে স্থাপিত সযত্নে রক্ষিত ।।

পূজা শুরু শঙ্খ বাজে , দেবীর  বরনে ।
সাজ্জিত দেবীর গাত্র নানা আভরনে ।।

বিল্ব পত্র, পুষ্প মাল্য, দুর্বা আর সরা ।
সুপক্ক ধানের শীষ, হস্তে থাকে ধরা ।।

সিঁদুর মাখানো ঘটে, জ্বলে ধুপ, ধূনা।
এভাবে হয় দেবীর ভক্তি আরাধনা।।

জিজ্ঞাসি মাকে আমি কেন পূজো করো।
বলে, "বাছা বুঝিবেগো, আরো হলে বড়।।

আজ কালের ছেলেরা এও বোঝেনা তো।
এর জন্য চারিদিকে অনাচার এতো" ।।

বড়দের জিজ্ঞাসিলে তারা হেসে কয় ।
"লক্ষ্মী আরাধিলে ঘরে, ধন লাভ হয়" ।।

লক্ষ্মীর করিলে পূজা যদি ফেরে হাল ।
কেন তবে দেশ জুড়ে অন্নের আকাল ।।

কেন তবে এত লোক মরে অনাহারে ।
দেবী কি ঘোমায় তবে স্বর্গে পড়ে পড়ে ।।

এ হেন আচার ভুল, করিনা তা দাবী ।
বিশ্বাসে আঘাত করা অনুচিত ভাবি ।।

তিনি যদি বিরাজেন  ভক্তদের ঘরে ।
কিভাবে দেখেন চেয়ে ভক্ত অনাহারে ।।

এসব না মেনে পড়ি বড়দের ক্ষোভে ।
প্রসাদেতে নাড়ু খাই মিস্টতার লোভে।।

"ব্রতকথা" পড়ে কারো লাগিলে আঘাত ।
লক্ষ্মীকে বলিও দিতে অন্নহীনে ভাত ।।

যদি ভাব কর্মদোষে এই হেন হাল ।
আমাকে দিও গো তবে ঝেড়ে গালাগাল।।

কন্যা ভ্রুন হত্যা কত নিত্য হয়ে যায় ।
ঘটা করে লক্ষ্মী পূজো কি করে মানায় ।।

মানব সেবায়  জানি বাড়ে কর্মফল ।
মানি না তো দেবতার ঐশ্বরিক বল ।।


No comments:

Post a Comment