ভারত হল
বহু ধর্ম ও বহু ভাষা-ভাষীর দেশ। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই হল এ-দেশের মূল মন্ত্র।
সংবিধান অনুসারে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কথাটি শুধু সংবিধানের পাতাতে
সীমাবদ্ধ বাস্তবে তার কোন রূপ পরিলক্ষিত হয় না। ধর্ম নিয়ে হানাহানিতে অতীত থেকে
বর্তমান যখন হাজার হাজার মানুষ কে প্রাণ দিতে হয়, তখন
ধর্মনিরপেক্ষ কথাটি যেন পরিহাসে রূপান্তরিত হয়। ভারতের তথাকথিত স্বাধীনতা লাভের
থেকে ধর্মবিশ্বাস কে কেন্দ্র করে সংহতির অভাব সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আর এর পরিণতিতে
আমরা পেয়েছি কাশ্মীর, পাঞ্জাব, গোর্খাল্যান্ড, বোড়োল্যান্ডের মত সমস্যা।
তাছাড়া অতীতের রাম জন্মভূমি থেকে গোধরা কান্ড সবই ধর্মান্ধতার
অশুভ পরিনতি। ধর্ম কে অপব্যবহার করে একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ দেশের অসংখ্য নিরীহ
অশিক্ষিত সাধারণ মানুষ কে উন্মত্ত করে তুলেছে তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ
সিদ্ধির জন্য। এর জন্য আজকাল কাল্পনিক ধর্মকে কেন্দ্র করে যত হিংসা বিদ্বেষ থেকে
ধর্ষন নরহত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে আকচার। আর তা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের
মাধ্যমে। আর তা থেকেই আবার জন্ম নিচ্ছে পাল্টা প্রতিহিংসা। কখনো কখনো তা দেশের
সীমানা অতিক্রম করে চলে যাচ্ছে। অনেকটা ঐ মিঠুন চক্রবর্তীর ডায়ালোগের মত - মারব
এখানে, লাশ
পড়বে শ্মশানে।
আসলে এসব ঘটে চলেছে ধর্ম সম্পর্কে আমাদের সঠিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের অভাবে। এটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি। আমাদের কে কখনই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হয় না। মানুষ কে নতুন কিছু জানার জন্য প্রশ্ন করতে, নতুন করে ভাবতে না শিখিয়ে পুরনো বস্তাপচা ধ্যান ধারণা গুলো আমাদের মানতে বাধ্য করা হয়। তাই আজ বন্ধু সময় এসেছে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর।
কোন কিছু কে বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া নয় যুক্তি বিজ্ঞানের
আলোকে যাচাই করে তবে মেনে নেওয়া। অন্ধ কুসংস্কারের গলি পথে না হেঁটে জ্ঞানের আলোর
পথে হাঁটুন। পথ কিন্তু বন্ধুর তবে বন্ধুর অভাব হবে না। এই ভাবে একদিন হাঁটতে
হাঁটতে হাত ধরতে ধরতে দেখবেন ধর্ম নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা মানুষ গুলো হারিয়ে গেছে।
ধর্মীয় হানাহানি বন্ধ হয়েছে। মানুষ বুঝতে শিখেছে - "জলের ধর্ম যেমন প্লবতা, আগুনে ধর্ম যেমন দাহ্যতা,
তেমনি মানুষের একটাই ধর্ম মানবতা।
--------------
@তাপস গায়েন
No comments:
Post a Comment