আমি তখন তরুনী ; ফ্রক পড়ি ; মাথার একরাশ ঘন কালো ঝাঁকরা , চুলে , বাঁধা থাকতো , রংধনু রং-এর ফিতে ; আমার পায়ে থাকতো ঝুঙুর-ঝুঙুর বাজা রূপোর নূপুর ; দু-হাতে....দু-ডজন কাঁচের রংধনু রং-এর চূড়ী ; গলায় রংধনু রং-এর পুতির হার ; কানে রূপোর কানের দুল ; নাকে সোনার নথ ;
পর পর চার বছর আমি এ ব্রত কোরেছিলুম ; প্রতি কার্তিক মাসে , সন্ধ্যায় , তুলসী তলায় , আপন হাতে গড়া ,একটি মাটীর , বেদীর ওপরে , মোট ৯ টি ………. প্রথমে , তিনটি কূল পাতা , তার ওপরে তিনটি তুলসী পাতা , তার ওপরে.......একটিতে তিনটি পাতা থাকবে , এরকম , এক-একটি দুর্বা ঘাস হবে , সে রকম তিনটি দুর্বা রাখতুম , তার ওপরে , নিজের হাতে গড়া , তিনটি মাটীর প্রদীপ , জ্বেলে , দিতুম পাশাপাশি ; ওই বেদীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ; তারপর , রূপোর ঘট থেকে , ডান হাতে গঙ্গা জল নিয়েওই প্রদীপ্গুলিকে প্রদক্ষিণ করতো , আমার হাত , তিনবার ............আর আমার মুখ , সাথে-সাথে মন্ত্রো ও বোল্তো.......
আর এখন , আমি , প্রৌঢ়ো ; কার্তিক মাসে , বিজলী বাতীর , সুইচ্গুলি অন করে দিই........মন্ত্রো ও ভুলে গেছি........আর পরনে ? ......................প্যান্ট ও শার্ট......বসে-বসে সন্ধ্যার সময় .......... পপ সং শুনি ও ডান্স দেখি......রঙ্গিন পরদায়......সময়ে জীবনের সব-ই বদলায়.........................কী আর করা যায়....................অকারণ শুধু হাসি পায়........................
© অঞ্জলি দে নন্দী(মম)
No comments:
Post a Comment