Tuesday, 22 November 2016

।। অঘ্রানের ঘ্রাণে ।।


অগ্রহায়ণের শীতের সকাল
বাড়ীর ছোট্ট বারান্দায়,
সোনালী রোদ গায়ে মেখে
কাগজ আসার প্রতীক্ষায়।

সামনে হঠাৎ তাকিয়ে দেখি
বয়স্ক এক লোক,
চেয়ে আছেন আমার দিকে
অবাক দু'টি চোখ।

কাউকে কি খোঁজেন নাকি?
প্রশ্ন করি তাঁকে।
উত্তরে তার মৃদু হাসি
ফুটল ঠোঁটের ফাঁকে।

ধীরে ধীরে কাছে এলেন
নুতন নুতন লাগে!
বলি তাকে, ঠিক ধরেছেন
এই মাসকয়েক আগে।

এখানে তো সবাই নুতন
ছিল মস্ত জলাশয়,
ভরা ছিল খেজুর গাছ
আর জংলা আগাছায়।

খেজুর গাছ কয়েকটা তো
এই জমিতেও ছিলো,
মাটি ভরাট করার সময়
উপড়ে ফেলে দিলো।

বৃদ্ধ বলেন জানি জানি
তাইতো তোমার দ্বারে,
খুঁজতে এলাম সেসব স্মৃতি
আজকে শীতের ভোরে।

দিনের আলো ফোটার আগে
এসে লুকিয়ে চুপিসাড়ে,
পেট পুরে খেতাম সবাই
রসের হাঁড়ি পেড়ে।

বাগান দাদু দেখতেন সব
থাকতেন চোখ বুজে,
আমাদের এই চুরির মাঝে
তাকেই পেতেন খুঁজে।

আজকে তো সব অট্টালিকা
ইট পাথরের সারি,
হারিয়ে গেছে কখন যেন
খেজুর রসের হাঁড়ি।

তবু অঘ্রানের প্রভাত এলেই
আজও রসের টানে,
অজান্তেই একবার ভাই
আসি গো এইখানে।

মনে ভাবি এমনি করেই
কতো স্বপ্ন শতশত,
আজ নগরায়ন করছে হরণ
খেজুর রসের মতো।



______________
© অনাদি চক্রবর্তী


No comments:

Post a Comment