চারিদিকে
আলোর রোশনাই,
ঢাক
বাজছে,
কতো
লোক সেজেগুজে বেরুচ্ছে রাস্তায়, কত হৈ হুল্লোড় এর শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে চারিদিকে। সবাই কত মজা
করছে। করবেই না বা কেন, পুজো বলে কথা, বছরে একবারই তো আসে। তবুও তবুও আমি আনন্দ করতে পারছি না। আমার
ঘরে আলো জ্বলে না।
একদিন
এই আলোর রোশনাই আমার জীবনে অন্ধকার এনে দিয়েছিল।
খুব আনন্দে ছিলাম পুজোর আগে আগের বছর। মা'য়ের সাথে কত কেনাকাটা করলাম পুজোর জন্য। জামা, জুতো, কাজল, মাথার ক্লিপ.. কত কি। খুব মজায় ছিলাম।
খুব আনন্দে ছিলাম পুজোর আগে আগের বছর। মা'য়ের সাথে কত কেনাকাটা করলাম পুজোর জন্য। জামা, জুতো, কাজল, মাথার ক্লিপ.. কত কি। খুব মজায় ছিলাম।
এই আনন্দের মধ্যে একদিন কানে ভেসে এল ঠাকুরমার
গলা...
"আমার নাতি চাই নাতি বুঝলি খোকা.. যদি তোর বউ আমায় নাতি দিতে না পারে তবে ওকে বাপের বাড়ি দিয়ে আয়। আমি তোর আবার বিয়ে দেব। এমন পাপিষ্ঠা বউ আমার চাই না। আর নাহলে আমি কাশিবাসী হলাম। "
--"আরে মা শান্ত হও, সব হবে " (বাবার জবাব)
কথাগুলো মা'য়ের কানে যাওয়ায় মা খুব কষ্ট পেল। ভাবল "এই যে রোজ আদর করে এত ফল, দুধ, পুষ্টিকর খাবার, আমার যা যা খেতে ইচ্ছা করে সব যে শাশুড়ী মা নিজের হাতে বানিয়ে আমায় নিজের হাতে খাওয়ান সব মিথ্যে?? কেন কেন এত লোকদেখানো?? "
সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে মা একদিন ছাদ থেকে নামছিল। হঠাৎ দেখি সিঁড়িতে তেল পরে রয়েছে, মাকে চিৎকার করে কত বললাম... "মা থামো, তোমার পায়ের কাছে তেল। তুমি যে পরে যাবে আর এক পা বাড়ালে। "
মা শুনতে পেল না আমার কথা। হুরমুরিয়ে সিঁড়ি থেকে পরে গড়িয়ে পরে গেল আমার ৮ মাসের সন্তান সম্ভবা মা। সব শেষ। আমিও। আমার আর পৃথিবীর আলো দেখা হলো না। পুজোর আলো কি দেখব। অন্ধকারে ভরে গেল সেই ঘর যেই ঘরে মা'য়ের কাছে আমি কত গল্প শুনতাম রোজ রাতে ঘুমোতে যাবার আগে। আজ আমার মা'য়ের সাথে কেবল অন্ধকার সঙ্গী হয়ে আছে।। পুজো সে তো আমার আর মা'য়ের জন্য নয়।।
(সেদিন বুঝলাম আমি মেয়ে হয়ে জন্ম
নিচ্ছিলাম, সেটাই আমার দোষ। সবার চোখে যাতে ঠাকুরমা খারাপ না
হন, তাই অমন ছল করে চলার পথে তেল ফেলে আমায় হত্যা
করল। হুম, আমি একে হত্যাই বলব )
___________
@মনিকা ঘোষ
No comments:
Post a Comment