।। জলে ভাসে বেহুলা লখিন্দরের ভেলা ।।

কি প্রেম রাখা ছিল বিষদেহ শবের পাশে
লখিন্দর নিয়ে বেহুলার ভেলা অকালে ভাসে ৷
পাড়ে খন্জনা পাখি শিমুল ফুলের কাঁটা গাছে
চুপচাপ ভয়ে ভয়ে বসে দেখে
লখিন্দর নিয়ে বেহুলার ভেলা সমুদ্র-জলে ভাসে ৷
এ যেন এক অজন্তা বৈভবী সুকথা পুরাণ
শেকড়ে জড়ানো দুখ রক্ত একগাদা গান
স্বপ্ন বাসর আবার জড়ানো
সুখ রাতভর প্রতিক্ষিত মিলান ৷

ভেলা ভাসে ছোট ছোট ঢেউ’এ ৷
পৃথিবী অন্ধকারে কিছু তারা জ্বলে
পাড়ে খন্জনা পাখি ফিরে গেছে গহনে
কাঁটা গাছ ফেলে আঁধার সন্তর্পণে
ঝিঁঝিঁ ডাকে দূরে নঙ্কত্র আঁড়ি করে ৷

ভেলা ভাসে ছোট ছোট ঢেউ’এ ৷
পাশের জমি থেকে পচানি পাট গন্ধ আনে
রাতের বাতাস,শেয়াল ডাকে শুদ্ধ অন্ধকারে
তারার বাতিতে বের করে আনে গন্ধ লাশ
পচানি পাট আর লাশের গন্ধ পরিময় পড়ে থাকে একদিকে ৷

ভেলা ভাসে ছোট ছোট ঢেউ’এ ৷
বেহুলা একা যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা দিয়ে
লখিন্দর বিষদেহ নিয়ে বসে থাকে সারা নিঃসঙ্গ রাতে ৷
ভোর হলে মনসার অনুরোধে যমরাজ আসে ৷
কেতকী ফুলের গন্ধ ৷ সুগন্ধে ভরে যায় সবদিকে ৷
যমরাজ লখিন্দরের গায়ে পা স্পর্শ করে বলে
যাও, সতীর পুণ্যে পুণ্য হোক তোমার শরীর
শুরু হোক বিষহীন নতুন জীবন
মরণ হোক সাপের মনসা মায়ের
জয় হোক ভালবাসা অবগুন্ঠন ৷

ভেলা এবার ফেরে বড় বড় ঢেউ’এ চাঁদ সদাগর ঘাটে ৷
কাঁটা গাছ ছেড়ে খন্জনা পাখি এসে বসে বেহুলার গা জুড়ে
বলে -৷
-এই নাও একরাশ গন্ধরাজ রজনীগন্ধা, সুগন্ধ আদরে ৷
-সাজাও বিষহীন লখিন্দরে
-সেই ভালবাসা থাকুক ঘরে হাজার বছর ধরে ৷
_______________________________________________
© অনুপ দত্ত

ঘোড় বন্দর-থানে/২০১৭-পরিমার্জিত/রাত-২টা
(বানান টাইপো অনিচ্ছাকৃত)